হর্ন বন্ধ করা আমার দায়িত্ব নয়, আচরণগত পরিবর্তন জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শব্দদূষণ রোধে কেবল আইন প্রণয়ন যথেষ্ট নয়; এর কার্যকর প্রয়োগ এবং নাগরিকদের আচরণগত পরিবর্তন অপরিহার্য। তিনি বলেন, “হর্ন বন্ধ করা আমার দায়িত্ব নয়, আমার দায়িত্ব হচ্ছে আইন প্রয়োগ করা। আচরণগত পরিবর্তন আনা জরুরি।”
শনিবার রাজধানীর বিজয় সরণির সামরিক জাদুঘরে আয়োজিত ‘সবুজ জ্বালানি অলিম্পিয়াড ২০২৫’-এ তিনি এসব কথা বলেন।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন ও সচেতনতা
উপদেষ্টা জানান, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ সালে প্রণীত বিধিমালায় রাজধানীতে শব্দের গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা সময় ও এলাকাভেদে নির্ধারণ করা হয়েছে। নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ডেসিবল এবং রাতে ৪০ ডেসিবল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ এবং রাতে ৪৫ ডেসিবল, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ এবং রাতে ৫০ ডেসিবল, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ এবং রাতে ৬০ ডেসিবল, এবং শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ এবং রাতে ৭০ ডেসিবল শব্দমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “একটি গাড়িতে যেহেতু একটিই হর্ন থাকে, তাই তা ৪০ ডেসিবলের নিচে থাকার কথা। কিন্তু ঢাকার গাড়িতে হর্ন যে এর চেয়ে বেশি মাত্রায় বাজে, সেটা পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানেই দেখা গেছে।”
‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সরকার পতনের পর গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা ও এর উত্তর-দক্ষিণে দেড় কিলোমিটার এলাকাকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে। উপদেষ্টা জানান, জানুয়ারি মাস থেকে আরও ১০টি সড়ক ‘নীরব এলাকা’ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশ রক্ষা
উপদেষ্টা বলেন, “ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভয়ঙ্কর পৃথিবী রেখে যাওয়া হচ্ছে; যেখানে নজিরবিহীন বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের পৌনঃপুনিকতা মারাত্মকভাবে বেড়ে যাবে।”
তরুণদের সম্পৃক্ততা
তরুণদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সম্পৃক্ততার বিষয়ে তিনি বলেন, “এই সরকারই তরুণদের। তারমানে এই নয় আমি নিজেকে তরুণ দাবি করছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম তিনজন তরুণ উপদেষ্টা পরিষদে সদস্য হয়েছিলেন। তারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব করছিলেন এবং করছেন।”
উপদেষ্টা আরও বলেন, “শব্দদূষণ হোক, নদীদূষণ হোক, খাল বাঁচানো হোক, মাঠ বাঁচানো হোক— যখন আমরা ডাক দেবো, তখন আপনারা সবাই আমাদের আহ্বানে এগিয়ে আসবেন। এটি কোনও ব্যক্তি স্বার্থের কাজ নয়, এটি দেশ গড়ার কাজ। ব্যক্তি স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে দেশ গড়ার কাজে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।”Bangla Tribune
পরিবেশ উপদেষ্টার বক্তব্যে স্পষ্ট যে, শব্দদূষণ রোধে কেবল আইন নয়, নাগরিকদের সচেতনতা এবং আচরণগত পরিবর্তনই মূল চাবিকাঠি।
