জনতা ব্যাংক: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে!

jonota-bank-collapse-corruption-scandal

এক সময়ের গর্বিত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক জনতা ব্যাংক আজ দেউলিয়াত্বের মুখে। দেশ গঠনের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে বস্ত্র ও তৈরি পোশাকসহ শিল্পখাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করে যে ব্যাংক জাতীয় অর্থনীতিকে বেগবান করেছিল, সেই ব্যাংকটি আজ নীতি-নৈতিকতাহীন লুটপাটের বলি।

৩ মাসে লোকসান ৯০০ কোটি টাকা, বছরে ২২০০ কোটি টাকা। রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়বদ্ধতার ঘাটতি এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারে ব্যাংকটি এখন টালমাটাল। বিশ্লেষকরা বলছেন—এটা কোনো আর্থিক দুরাবস্থা নয়, এটা একটি পরিকল্পিত অর্থ-লুটপাটের ফল।


💥 লুটপাটের মহাযজ্ঞ: কে কত খেল?

  • সালমান এফ রহমান – প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার। ২৭ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন জনতা ব্যাংক থেকে! নিয়েছেন একক ঋণ সীমা ভেঙে, এক মাসে খুলেছেন আটটি নতুন কোম্পানি। অর্থ ফেরত? সে তো দূরের কথা।
  • এস আলম গ্রুপ – ইসলামী ব্যাংকের মতো জনতা ব্যাংক থেকেও ১৪ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। অর্থ পরিশোধের কোনো রেকর্ড নেই।
  • নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদার – ১৫৬ কোটি টাকার মূল ঋণে ২৬১ কোটি টাকা সুদ মাফ! নিয়ম না মেনেই বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের সহায়তায় এই অবিশ্বাস্য সুবিধা গ্রহণ করেছেন।

🏦 ব্যাংকের ভেতরেই ধসের ষড়যন্ত্র!

জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিরা রাজনৈতিক প্রভাব ও সুবিধাভোগী সিন্ডিকেটের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছেন। সাবেক এমডি আব্দুস সালাম আজাদ, যার আমলে সবচেয়ে বেশি অর্থ বাইরে গেছে, এখন দেশ ছেড়ে পলাতক। তিনি নিজের জন্য বিদেশে সম্পদ গড়েছেন—ফেলে গেছেন একটি ধ্বংসপ্রায় প্রতিষ্ঠান।


📉 ঋণ আদায়ে নয়, চাপ আমানতের ওপর!

ব্যাংকের ভেতর থেকে অভিযোগ উঠেছে—বর্তমান কর্তৃপক্ষ ঋণ আদায়ের চেয়ে আমানত সংগ্রহে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। মাসে ৫ লাখ টাকা করে আমানত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে কর্মকর্তাদের ওপর। অথচ খেলাপি ঋণ ও সুদ আদায়ে নেই কোনো সৃজনশীল উদ্যোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *