জামায়াতের উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধা হাফিজ ছিদ্দিকীর খোলা চিঠি

হাতী-ঘোড়া গেলো তল, ইলিয়াস বললেন, “কতো জল।” এই ঐতিহাসিক প্রবাদটি ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা হাফিজ ছিদ্দিকী বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলন ও রাজনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, কনক ছারওয়ার, পিনাকি দাদা, ইলিয়াস হোসাইন, মেজর দেলোয়ার, কর্নেল শহীদ, জুলকার নাইন সায়ের, মিনা ফারাহসহ অনেকে “জুলাই বিপ্লবের” প্রেরণা এবং লজিস্টিক সহায়তাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে শতবর্ষের পুরনো রাজনৈতিক দল পরিচালনার জটিলতা ও অঙ্কের অসমতা তিনি বিশেষভাবে তুলে ধরেন।
হাফিজ ছিদ্দিকী উল্লেখ করেন, উপমহাদেশে কংগ্রেস, মুসলিম লীগ, ন্যাপ, এমনকি আওয়ামী লীগ — রাষ্ট্রীয় সুবিধা পেয়েও দীর্ঘমেয়াদে তেপান্তরে হারিয়ে গেছে। তার ব্যাখ্যায়, আদর্শের অভাব এবং স্বার্থপরতা মুক্ত রাজনৈতিক আদর্শকে টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
নিজের রাজনৈতিক যাত্রার প্রসঙ্গে তিনি জানান, ষাটের দশকে ছাত্রলীগ হয়ে, পরে জাসদ-গণবাহিনীর সদস্য এবং শেষত জামায়াতে ইসলামীতে দীর্ঘ ৪১ বছরের রাজনৈতিক সক্রিয়তা তাঁর অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করেছে। তিনি দাবি করেন, “ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্যই জামায়াত রাজনীতি করে,” এবং মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমাজ সংস্কারের মাধ্যমে জমিনে দ্বীন প্রতিষ্ঠা।
তিনি আরও বলেন, গতানুগতিক রাজনীতির “জোড়াতালি” দিয়ে সত্যিকার পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়; এজন্য কোরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াসের গবেষণাভিত্তিক ধৈর্যের শিক্ষা গ্রহণ অপরিহার্য।
সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইনকে উদ্দেশ্য করে হাফিজ ছিদ্দিকী বলেন, জামায়াতের ভুল দেখতে পাওয়া স্বাভাবিক হলেও, ইসলামের প্রতি নিবেদিত থাকলে ক্ষোভ থেকে অশালীন ভাষা ব্যবহার বা নেতাদের চরিত্রহনন মুমিনের আচরণ হওয়া উচিত নয়। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ইসলামী আন্দোলনের নেতারা রাসুলের (সা.) প্রতিনিধিত্ব করেন, তাই তাঁদের সম্মানের ব্যাপারে সকলের সচেতন থাকা প্রয়োজন।
শেষে, জামায়াতের প্রতি ইলিয়াস হোসাইনের অতীত ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে হাফিজ ছিদ্দিকী বলেন, “আপনার বিরূপ আচরণ হতাশাজনক, তবে লক্ষ-কোটি জামায়াত সমর্থক এখনো আপনাকে ভালোবাসে।”

মুক্তিযোদ্ধা, কলামিষ্ট, ও ইসলামী গবেষক- হাফিজ ছিদ্দিকী