রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা পাঠাতে দুই দেশের সম্মতি চায় জাতিসংঘ

রাখাইন রাজ্যে আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মানবিক করিডোর গঠনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতির প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, সীমান্ত পার হয়ে কোনো সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে উভয় দেশের অনুমতি অপরিহার্য।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জাতিসংঘ তার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে রাখাইন রাজ্যের অবনতিশীল মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের মতে, মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে হলে রাজনৈতিক এবং আইনি অনুমতির প্রক্রিয়া অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক, নতুবা তাদের সরাসরি ভূমিকা সীমিত থাকবে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এক ব্রিফিংয়ে জানান, নীতিগতভাবে বাংলাদেশ মানবিক করিডোরের বিষয়ে সম্মত রয়েছে। তবে তিনি শর্তসাপেক্ষে এই সম্মতির কথা উল্লেখ করেন। এসব শর্ত পূরণ হলেই বাংলাদেশ জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কিছু রাজনৈতিক দল মনে করছে, সরকারের এমন সিদ্ধান্ত জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। তাদের প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই কীভাবে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো?
অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম দাবি করেছেন, জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত মানবিক করিডোর নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি গত অক্টোবরে এক প্রতিবেদনে রাখাইন রাজ্যের চরম মানবিক সংকটের চিত্র তুলে ধরে। সেখানে বলা হয়, সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে পণ্য সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে, আয়ের উৎস নেই, খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং জরুরি সেবার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। ফলে ঝুঁকিতে থাকা জনগণের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।