ইতালির গণমাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘নিপীড়িতদের পোপ ও দারিদ্র্যের ব্যাংকার’ হিসেবে আখ্যা

ইতালির জাতীয় গণমাধ্যম ‘রাই নিউজ ডট আইটি’তে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে গণমাধ্যমটি ড. ইউনূসকে ‘নিপীড়িতদের পোপ ও দারিদ্র্যের ব্যাংকার’ বলে অভিহিত করেছে।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, দেশের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আসন্ন নির্বাচন। তিনি জানান, স্বাস্থ্য, নির্বাচনসহ বিভিন্ন খাতে ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। এগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করা হবে। এরপর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাস নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, গত গ্রীষ্মে ছাত্র, তরুণ ও শ্রমিকদের আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এ আন্দোলনে সহিংস দমন-পীড়নের শিকার হয়ে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হন। পরে সরকারের পতনের পর প্যারিসে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীদের অনুরোধে তিনি দেশে ফিরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন। সে সময় দেশে চরম বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছিল বলে জানান ইউনূস।
পোপ ফ্রান্সিস সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আজকের দুনিয়ায় এমন নেতৃত্বের প্রয়োজন, যারা শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং মানবতার কল্যাণে ধর্মীয় বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করবেন। পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে তার গভীর বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, পোপ তার মাইক্রোক্রেডিট কার্যক্রমে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছিলেন এবং এ বিষয়ে বহুবার তাদের আলোচনা হয়েছে।
‘রাই নিউজ’ প্রতিবেদনে বলা হয়, দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্যহীন পৃথিবী গঠনের সংগ্রামে ড. ইউনূস ও পোপ ফ্রান্সিসের মধ্যে দারুণ মিল রয়েছে। এই দুই নেতাই সমাজের নিচুতলার মানুষদের উন্নয়নে কাজ করেছেন।
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে গভীর শ্রদ্ধা জানাতে ড. ইউনূস বাংলাদেশ থেকে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় যান বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া, রাই নিউজ স্মরণ করিয়ে দেয়, ২০১৭ সালে পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশ সফরে এসে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, যা সারা বিশ্বে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল।
