জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসে আইন উপদেষ্টার বক্তব্য: “হয়রানি ও বিদ্বেষমূলক মামলা উদ্বেগজনক

ঢাকা, সোমবার — রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, দেশে বর্তমানে অনেক হয়রানি ও বিদ্বেষমূলক মামলা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “অন্যের জায়গা-জমি বা ব্যবসা দখলের উদ্দেশ্যে মামলা করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল জানান, আইনে মামলা করার কোনো বাধা না থাকায় যে কেউ মামলা করতে পারছে। তবে মামলা দায়েরের পর সরকার পুলিশ ও আদালতের মাধ্যমে প্রতিকার দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “যখন অতিরিক্ত সংখ্যক মানুষকে আসামি করা হয়, তখন এটি বিচারপ্রক্রিয়াকেও জটিল করে তোলে।”
তিনি আরও জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছে যে, অভিযোগের বস্তুনিষ্ঠতা না থাকলে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। একইসঙ্গে আদালতকেও অনুরোধ করা হয়েছে যাতে ভিত্তিহীন মামলায় যথাসম্ভব আইনগত সহায়তা প্রদান করা হয়।
একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে আইন উপদেষ্টা ইরেশ যাকেরসহ কয়েকটি আলোচিত মামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমাদের অনুরোধ থাকবে, সাংবাদিকরা মামলাকারীদের উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখুন এবং জনগণের সামনে তাদের পরিচয় উন্মোচন করুন, যদি তারা হীন উদ্দেশ্যে মামলা করে থাকে।”
বক্তৃতায় আসিফ নজরুল জানান, আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর মামলা পরিচালনায় সময়, অর্থ ও হয়রানি কমানোর দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। ইতোমধ্যে দেওয়ানি কার্যবিধিতে যুগান্তকারী সংশোধন করা হয়েছে, যা শিগগিরই উপদেষ্টা পরিষদের চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে।
ফৌজদারি কার্যবিধিতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কাজ চলছে বলে জানান তিনি। প্রতি বছর দেশে প্রায় পাঁচ লাখ মামলা দায়ের হয়, যেখানে জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা বছরে ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি করে। লক্ষ্য হলো, বছরে দুই লাখ মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে আদালতের মামলা চাপ অন্তত ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনা।
অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী। অনুষ্ঠানে সেরা লিগ্যাল এইড অফিসার এবং সেরা প্যানেল আইনজীবীদের সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।