ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: সাবেক বিচারপতির শান্তি আহ্বান

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ বন্দুক হামলায় অন্তত ২৮ জন পর্যটকের মৃত্যু এবং বহু মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায় ভারতে তীব্র আবেগ ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারতের রাজনৈতিক মহল ও মিডিয়ার মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। মোদি সরকারের কঠোর বক্তব্যে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাৎজু মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশেরই ব্যয়বহুল যুদ্ধ চালানোর সক্ষমতা নেই। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, উত্তেজনার পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক পথ বেছে নেওয়া উচিত।
জিও নিউজে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে কাৎজু তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। প্রথমত, ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই আর্থিকভাবে দুর্বল; তাই যুদ্ধের মতো ব্যয়বহুল অভিযানে যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত, যুদ্ধের ফলাফল অনিশ্চিত—কোন দিকে গিয়ে তা গড়াবে তা অনুমান করা কঠিন। তৃতীয়ত, উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় সংঘাতের পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শান্তিপূর্ণ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। একই ধরনের দূরদৃষ্টি ও সংযম এই পরিস্থিতিতেও অনুসরণ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন কাৎজু।
তিনি আরও বলেন, উভয় দেশের সরকার পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে, যার চরম মূল্য দিতে হচ্ছে দরিদ্র জনগণকে। উদাহরণ হিসেবে তিনি পাকিস্তানে পানির সংকটের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ভারতের পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলতে পারে।
মার্কন্ডেয় কাৎজু স্পষ্ট করে দেন, ভারত ও পাকিস্তানের আসল শত্রু হলো দারিদ্র্য, বেকারত্ব, শিশু অপুষ্টি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চমূল্য এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অপ্রতুলতা। তার মতে, যুদ্ধের পথে না গিয়ে এই সমস্যাগুলোর বিরুদ্ধে একযোগে লড়াই করাই হবে দুই জাতির সত্যিকারের বিজয়।
শেষ পর্যন্ত তিনি ভারত ও পাকিস্তানের জনগণ এবং নেতৃত্বের উদ্দেশে আহ্বান জানান—আবেগ নয়, বরং যুক্তি ও বিচক্ষণতা দিয়ে পথ চলার জন্য, যেন শান্তির আলোয় এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ আলোকিত হয়।
