ডিসেম্বরেই ভোটের লক্ষ্যে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন, কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ জুন-জুলাইয়ে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার ঘোষিত সময়সীমা—ডিসেম্বর—ধরেই। আগামী জুন-জুলাই মাসের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে নির্বাচন কমিশনের কর্মপরিকল্পনা (Election Workplan)। বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, “আমরা বারবার ঘোষিত যে টাইমলাইন, সেই অনুযায়ীই কাজ করছি। নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরের দিকেই এগোচ্ছি। আশা করছি, জুন বা জুলাইয়ের মধ্যে আমাদের প্রিন্টেড ওয়ার্কপ্ল্যান সবার হাতে পৌঁছে যাবে।”
🗳️ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অনিশ্চয়তা, ইসির স্পষ্ট বার্তা
একইদিন দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি প্রতিনিধিদল। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট ডেডলাইন দেননি—তিনি ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে ভোটের সম্ভাবনার কথা বলেছেন।
এই প্রেক্ষাপটেই ইসি’র পক্ষ থেকে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আমরা আমাদের স্বতন্ত্র পরিকল্পনা অনুযায়ীই এগোচ্ছি। এর অংশ হিসেবে আসন পুনর্বিন্যাস, ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণ এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।”
📌 আসন পুনর্বিন্যাস ও আইন সংশোধনের প্রস্তুতি
ইসি কমিশনার জানান, সংসদীয় আসনের প্রশাসনিক নাম পরিবর্তনের কাজ এখন চলমান। তিনি আরও বলেন, “আইন সংশোধন পেলে সীমানা পুনর্বিন্যাস তিন মাসের মধ্যেই শেষ করা যাবে। আশা করছি, আগামী তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনপূর্ব প্রাথমিক কাজগুলো (pre-work) শেষ করতে পারব।”
🆕 রাজনৈতিক দল নিবন্ধন: সময়সীমার শেষ প্রান্তে
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের শেষ সময় ২০ এপ্রিল। কমিশনার বলেন, “এখন পর্যন্ত তিনটি দল আবেদন করেছে এবং আরও কয়েকটি সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। গতবার প্রায় ১০০টি আবেদন এসেছিল, এবার সংখ্যাটি কম হলেও আমরা যথাসময়ে কাজ শেষ করতে প্রস্তুত।”

তিনি আরও জানান, নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। “ছয় মাস লাগে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। আমরা সময়মতো সব কাজ শেষ করব—এই বিষয়ে আশাবাদী।”
বিষয় | অগ্রগতি |
---|---|
নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় | ডিসেম্বর ২০২৫ |
কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ | জুন-জুলাই ২০২৫ |
ভোটার তালিকা | প্রায় সম্পন্ন |
আসন পুনর্বিন্যাস | প্রশাসনিক নাম পরিবর্তনের কাজ চলমান |
রাজনৈতিক দল নিবন্ধন | ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আবেদনের সময় |
বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের শঙ্কা থাকলেও নির্বাচন কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট—সংবিধানসম্মত সময় অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ডিসেম্বরেই। আসন পুনর্বিন্যাস, দলীয় নিবন্ধন ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ—সব কাজ চলছে পূর্বনির্ধারিত রোডম্যাপ অনুসারে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও নির্বাচন কমিশনের এই সক্রিয় প্রস্তুতি দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।