কৃষি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে সক্রিয় মন্ত্রণালয়

দেশের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোর (এটিআই) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের ৮ দফা দাবির বাস্তবায়ন নিয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সাম্প্রতিক এক বৈঠকে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে আলোচনার পর ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

গত ১৩ এপ্রিল কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি সংলাপ হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছয়জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

কী রয়েছে দাবিসমূহে?

৮ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে:

  1. স্বতন্ত্র উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান গঠনের সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। ১৭ এপ্রিল এই প্রস্তাব মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে পাঠানো হয়।
  2. চাকরির গ্রেড ইস্যু: উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদে উন্নীতকরণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার কারণে সরাসরি প্রজ্ঞাপন জারির সুযোগ না থাকলেও নিয়োগ প্রক্রিয়া সচল রাখতে পিএসসির সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
  3. শিক্ষক সংকট নিরসন: ইতোমধ্যে বিভিন্ন এটিআই-তে নতুন প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, অবশিষ্ট শূন্য পদগুলোও দ্রুত পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
  4. কারিকুলাম সমস্যা সমাধান: শিক্ষার্থীরা যদি কোনো সমস্যা লিখিতভাবে জানায়, তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
  5. গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পদ সংরক্ষণ: কৃষি গবেষণা সংস্থাগুলোতে ডিপ্লোমাধারীদের জন্য আলাদা পদ সংরক্ষণের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
  6. বেসরকারি খাতে ন্যায্য বেতন: বেসরকারি খাতে কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের ১০ম গ্রেডের সমতুল্য বেতন নিশ্চিত করার প্রত্যাশা থাকলেও, মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার সীমিত।
  7. মাঠ সংযুক্তি ভাতা: মাঠ সংযুক্তিতে শিক্ষার্থীদের ভাতা প্রদানের বিষয়টি পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
  8. ফাউন্ডেশন কোর্স: উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য ২ মাসব্যাপী ট্রেনিং কোর্সের মডিউল প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপট

গত কয়েক মাস ধরে এটিআই শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ে আন্দোলন করে আসছিল। এর আগে ১১ এপ্রিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্ররা মনে করছে, এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন হলে কৃষি শিক্ষার মান এবং তাদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান দুটোই নতুন মাত্রা পাবে।

পর্যালোচনামূলক বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষি খাতের দক্ষ জনবল গঠনে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে এই খাতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

এখন সকলের চোখ মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী বাস্তবায়ন কর্মকাণ্ডের দিকে। বাস্তবিক অগ্রগতি দেখতে চায় শিক্ষার্থীরা, শুধু আশ্বাস নয়—প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *